Saturday, April 28, 2012

সহবাস

When you cannot make up your mind which of two evenly balanced courses of action you should take - choose the bolder.
William Joseph Slim




বোবা নক্ষত্রের রাত, হিম তার ঘাস ছুঁইছুঁই
অনন্ত বিদায় শুরু হয়েছিলো অশ্রাব্য অবক্ষয়ে
চৌকাঠে জমে ওঠা মেঘে বৃষ্টি নামে তুমুল
কদিন ঢেকে দেব সব ব্যক্তিগত ব্যথা বাসনা
চিবুকের সযত্নে আঁকা চাঁদ নিভে গেছে
ঠোঁট কুটিলের ইচ্ছা দিতো এমন ছোঁয়ায়
অনেক আগের দিন চলে গেছে জলের ওপাশে   
বিলাসী মদিরা যজ্ঞে আহুতি পায় পরিযায়ী অসারতা
জোস্নায় পুঁথি পাঠে ধ্যানমগ্ন তুমিও আত্মলীন হলে
নিঁখুত চামড়ার নিচে পাশাপাশি আতৃপ্ত ঘড়ি সহবাসে
লিঙ্গ থেকে স্থলিত বীর্যে গলে গলে নদী হয় মেঘ।।

শিরোনামহীন




ভিখারির সংখ্যানুপাতে অপর্যাপ্ত ফুটপাথে সিলিং ফ্যানের ঘাম মনে পড়ে
দোকানের পাশে হেঁটে পুড়ে যাওয়া অভিমান
প্রিয়তম অসুখ এসে শাদা করে দিয়ে যাক বিছানার মলিন চাদর
পিঠফেরানো সম্পর্ক থেকে তুলে রাখছি নিশ্চিন্ত জীবনপ্রণালী।
চুমু থেকে দু’এক পা হেঁটে এসে দেখো আলাপী উঠোন
পরস্পর গুজে নিচ্ছে ঠোঁট ও সন্ধ্যা
মৃদু হতে চাওয়া ঠোঁটের আভাস ভিজবে আবার বর্ষাতুর পাখিপ্রলাপ বৃষ্টিতে
চন্দনের ঘ্রাণে রাত আরো নিঝুম আরো প্রগাঢ় হলে ছায়াহীন হরিণেরা আসে
শহর নদীর আঁচল খসে গেলে বড় বেমানান লাগে।
আমি জীর্ণ সেতুর বুকে হাত রাখি আর ভুলে যাই তোমার ঠিকানা

শিরোনামহীন ১


শিরোনামহীন ১

নিয়নের নীলে ভরে যাচ্ছে পোকামাকড়ের সংসার
সর্বনামে ডেকে ডেকে অবশিষ্ট ফল্গুজল
ছাদের বিলাসী টবে অচেনা ফুলে আকাশ হয়েছে পরবাসী
জলের হৃদয়ে দেখি মৃত চাঁদ আর আমার অস্থির প্রতিবিম্ব
ত্বকে লেগে আছে পালকের দাগ
টিভির এন্টেনায় একা একা দোল খায় ভোকাট্টা ঘুড়ি
তুলির নরম পোচে বেহিসেবী যত রঙ সুখ
অস্হির গাড়িগুলো হাইওয়ে ধরে রাতদিন ছুটে চলেছে তীব্র গতিতে
তোমার স্তনে উল্লাস সাজাও খানিক
হাওয়াগন্ধে ঘুম এলে পতনের শব্দে জাগি
বাকিটা পড়ে থাক বিছানার মৌনী চাদরে
অনায়াস আশ্রয় পেলে বৃষ্টি শেষে আকাশ ভালোবাসা খোঁজে
আমাকে শূন্য করে রেখেছে আকাশ
আমিও শূন্যতা এঁকে রাখি তীব্র বিলাসে।।

সাংসারিক


সাংসারিক ১
তোমার চোখের আলো আমাকে সমৃদ্ধ করে
রাতের আকাশ লিখে রাখে চাঁদের মহিমা,
সাংসার পালনে ব্যস্ত দলছুট লক্ষিপ্যাঁচা করে যায় বিষাদ যাপন।
শীত ঘুমে ডুব স্বপ্নেরা ইদানিং আমাকে মূক করে রাখে
গুঁড়ো বরফ আর সবুজ চায়ের স্বছতায় ঘোলা হয়ে আসে চোখ
ক্রমশ ক্ষয়ে যাওয়া চাঁদ পারদের মত ভেসে যায়
সেই আলোনিলীনতায় দেখা হোক, আমাদের মৃত্যু হোক

সাংসারিক ২
সিঁথিরেখায় ছন্নছাড়া খুশিতে ছুটে যাচ্ছে সকাল
বাথরুমে পোষাকের খুলে যাওয়া বিষন্ন সংগীতে একাকী জলের নৃত্য
স্নান শেষে স্নানঘরের আলোয় আয়নায় সব মুখই সুন্দর
প্রাঞ্জল যুবতীর চোখ জলকনায় ভেসে বেড়াচুম্বনপ্রতীক্ষা;
বায়ুকোষের শুন্যতাকে রক্তশুন্য আঙুল বেঁধে রাখে চারটি তারে
বিসর্জন শেষে ঢুলির ঢোলে লেগে থাকা সিঁদুরের  মহান প্রয়াণকথা
ঠোঁটে আঙ্গুল ছুঁয়ে আকাশে উড়িয়ে  বিমর্ষ হয়ে গেল একা ঝাউবন
মৌনী ঠোঁটের কাছে উড়ে যাবে একদিন মহুয়ার মদ নিয়ে মৌটুসী পাখি
আমি তো মুখর সব কবিতার কথা, আমাকে নিয়েই তার সমস্ত মৌনতা
ঠিক সময়ে এসে ভীরু বেড়ালের মতো  সেঁধিয়েছি ওড়নায়
দেখি প্রায় উদোম শরীরে নেচে যাচ্ছে আমার পরবর্তী প্রজন্ম

রোদ মলাটের চিঠি



বুকের কাছে  উপহার বৈশাখী রোদমলাটের বই
পাখি ও খাঁচা কীভাবে জেনেছে তার
শরীরের উদাসীন সঙ্গম
সন্তান জন্মের দায়মুক্তি পুষে রাখে পেট
গভীর ক্ষতের মত পড়ে থাকে সরু সরু অলিগলি পথ
নতুন ধানের গন্ধ ভরা ঋতুমতী মেয়ের গোড়ালি
ক্রমশ প্লাবিত হয় নীল মদীর স্বপ্নে।
রাতের বয়েস হলে তোমারও কি মনে পড়ে চু কিত্‌কিত্‌ কৈশোর
নাকি অন্ত্যমিলে চোখ চেটে খায় নোনাজল?
তোমার ভিতরে এখনো পুরোনো কিছু আলোয়
চিঠি লেখার খাম গুলো রামধনু হয়ে গেছে
   বায়ুকোষে বন্দী টলমল শিশিরের টুপটাপ নৈশব্দ্যে
   বেহিসেবী চোখ গিলে খায় লুকানো সম্ভ্রম
   মরশুমী ফুলে লেখা আছে সে দিনের কৌমার্য
   বলতো এবার মেঘ করলে কার বুকেতে শুই?

অলস রোদ


বহুদিন মেঘ রোদ আলো ছুঁয়ে উড়ে গেছো পাখি
তোমায় ছুঁয়ে দেবার পর আঙুলেও লেগে থাকে সুখ
সূর্য ওঠাবার দায় শিশিরের নয়
একাদশীর পাশে দুয়ে তিনে চাঁদ ফ্রী-
ছোপ ছোপ জমে আছে হাসি-খুনসুটি
ইচ্ছে মতো কোন একটি দৃশ্যের ভেতর ডুবে ডুবে ঘুম খাই,
ছাইদানি আঁকড়ে ধরি জ্বরের মতন
আর সুষুম্না স্নায়ুতে লালণ বাসা বাধে
আমার পাশের বালিশে দেখো তোমায় বিকেল ভুলছে অকারন
হৃদয়টা তবু নিজের বৃত্তে শুয়েই এখনো শুধু অলস রোদ পোহায়।