Sunday, October 3, 2010

ধানসিঁড়ি পথ

আলোকলতার ধানসিঁড়ি পথ মঞ্জু শাওন মঞ্জুরী
গুঞ্জা গুঞ্জা ফুলম্‌ তেলে আয় বুড়ি তোর মন ধরি;

মন যা, মন যা, যা উড়ে যা, মেঘ পেখমের রং বেরং-
মনকিশোরী তন্‌কিশোরী মন ঠিকানা জবর জং,

রাখ্‌ রাখালি পাখ্‌ পাখালি উড়ুৎ ফুরুৎ কন্ঠিহার,
মন দিয়ে ছুঁই, চোখ দিয়ে ছুঁই, জল কাঙালী ঘন্টিদার;

মন ঠিকানা আর ঢাকে না, এবার বুড়ি দুচোখ তোল
জলের বাজনা জল বাজাচ্ছে ভেতর পানে গন্ডোগোল।

Tuesday, September 28, 2010

না-বালিকা জানে

একটি পাগল ঘুরতেছিল তারই চারপাশে
এ-পথ দিয়ে ও-পথ দিয়ে লালপেড়ে ভৈরবী
কখন সে যে আসে, সম্মোহনীয় আগুনখেলা
ব্যাপ্ত চরাচরে অনেকখানি পোড়ায়

ভালোবাসা ফুরিয়ে গেলে জীবন যে তার
ব্যাঙে টানা রেলগাড়ী,
সবটা নয়, বালক এখন কিছু বুঝতে পারে,
সেই মেয়ে আজ নিজের অন্ধকারে
গভীরগোপন ক্ষত
কবিতা দিয়ে জোড়ায়

Thursday, July 1, 2010

প্রলাপ

যারা আমাকে নষ্ট রাতের মতো ঘেন্না করে
যারা আমাকে বিপরযয়ের মতো শত্রু ভাবে
যারা আমাকে নিক্ষেপিত সিগারেটের মতো ব্যবহার করে
যারা আমাকে সাইক্রিয়াটিষ্ট পেশেন্টের মতো ভালোবাসে
যারা আমাকে নিন্মচাপের মতো গালি দেয়
তারা সুখী হোক


অমোঘ বৃষ্টিতে ভিজে যাক তাদের অভিশাপ

বর্ষাই বৃক্ষের আয়ু বাড়ায়
অভিশাপের আয়ু বাড়াতে বাড়াতে
কলুষিত কঙ্কাল বেরোয় এক সময়...

আমার কঙ্কাল-শরীর ধরে রেখেছে
ওদের এক একটি কষ্ট পাওয়ার প্রতিক্রিয়া

গড ব্লেসড্ দেম ।।

.......................................


এ জন্ম তো পরাজয়, ষোলআনা চৈতালি বিকেল।
যেখানে যেটুকু চাই, একটু পাই বেশিটুকু ফেল্।
ফেল্ করলে দাদাবাবু দার্শনিক হতে ভাল লাগে।

আমি তো দেখেছি কিছু ফার্স্ট-সেকেন্ড ইস্কুলবয়
সহজে ছাড়ে না ওরা, ওরা খুব ছোট মনের হয়
তার থেকে আমাদেরকে ছাগল বলো দাদাবাবু, ভালো—

গাধারা আকাশ দেখে, ছাগলের খয়েরি চোখদুটি
আমাকে যে বলেছিল ``ছুটি চাই ছুটি চাই ছুটি’!
`অলস মহিষ হলো দার্শনিক’, বলেছিলে তুমি,
`শুধু শুধু চিন্তা তার দোষ’

হাসাহাসি হয়েছিল, বলেছিলে `মোষ হ`বি, মোষ?’

................................................



থিয়োডোর অডোর্নো বলেন—
অশ্চউইজের পরে
কবিতা লেখার কথা
কবিরা কখনো যেন
আর না ভাবেন।

দোহাই সম্পাদক
এরপর থেকে
আমলাশোলের ছবি
জলঙ্গীর ছবি
যেন অনুগ্রহ করে
বিনোদন সংখ্যায় ছাপেন।

Friday, June 25, 2010

উন্মাদ রাত্রির দিনোলিপি ৩

নষ্ট মুহুর্তেরা ক্লান্ত ঠোঁটের স্নেহতাপে
দ্রাঘিমা পেরিয়েও অন্তর্লীন জিঞ্জাসা!

তবে কেন,
জ্বলন্ত মোমের পাশে দাঁড়িয়ে
খুলেছিলে মেয়েবেলার আঁচল
স্ফীত তলপেট ছুঁয়েছিলো কম্পিত তালু

তবে কেন,
ছোঁয়াচে রোগের মত দ্রুত পায়ে
হেঁটে গিয়েছিলে তৃষ্ণার্ত ছায়াপথ ধরে
শূন্য ঘুমের নিস্তব্ধতায় এনেছিলে শরীরী স্পন্দন

প্লাবিত নদীর বুকের ধুমায়িত মেঘে ছিল আত্মহননের প্রতিশ্রুতি
তবে কেন, দলছুট ছোট্ট হাতিটির মত
অনাত্মীয় আত্মার সঙ্গে এখন শুধুই সাদা-রক্ত খেলা

ফিরতে তোমাকে হবেই দীর্ঘ সর্পিল চুম্বনের পর
তবে কেন.........

....................................


তেঁতুল পাতায় শুয়ে চাঁদের সঙ্গে শুরু খেলা...
আগুনের ঢেলা নাচে বুকের ভেতরে
নতুন ঋতুর গন্ধে জেগে ওঠে নতুন কিশোরী
চোখে তার অন্য এক ভাষা।

সে ভাষায় বিরহ ও মিলনের আশ্চর্য ইশারা।

শরীরে শরীর খুঁজছে সুখ ও অসুখ
ছুঁতে চায় বিন্দু ও ত্রিভূজ
নিখুঁত মুদ্রায়।

তেঁতুল পাতায় শুয়ে চাঁদের সঙ্গে শুরু খেলা
সে খেলায় বেড়ে যায় আকণ্ঠ পিপাসা।

........................


কেন যে বোঝ না তুমি
এই স্বাদ পুরোনো সঞ্চয়
বেঁছে থাকার ভেতরে অনর্গল স্বপ্ন বিনিময়।
তুমি তো শিকড় তুলে এনে দাও
প্রাসঙ্গিক রাত
টিউশন শেষে গরম গরম ভাত।

অফুরান ব্যর্থতায় আমি
ডাকটিকিটে সাঁটা বাদামী খাম
আর্দ্র চোখে মুছে ফেলি অনিশ্চিত ঘাম।

Monday, June 21, 2010

উন্মাদ রাত্রির দিনোলিপি ২

যৌনকোলাজের সাদা কালো নিশ্বাস
ক্রমশ আজ আক্সিজেন হয়ে উঠছে

সমস্ত আগ্নেয় পাহাড়ই এখন প্রবল সুপ্তিহীন
কঠিনপাঠ ঈশ্বর আজ সরে গেছে কত দূরে
কোনও রঙ মাখিনি কোথাও
তবুও কেমন এই বিচিত্র বসবাস

খোলা আকাশের নীচে আর্গলহীন
সমস্ত অশিল্পই আজ কী তীব্র চর্বচোষ্যলেহ্যপেয়
নিশ্চিন্তে শুয়ে আছে আত্মবিশ্বাসী গর্ভবাজার

জেনে শুনে অনিবার্য যখন ভুল করে যেতে হয়
সেই মতো ভ্রমে
সোজা ঢুকে যাই অনন্ত মজাঘর
শুধু দিন নয়, রাত নয় – অকাল আষ্টপ্রহর

........................

এক বিছানায় আমরা কাটিয়েছি সুদীর্ঘ জীবন। আজ মধ্যরাত্রে আকস্মাৎ তার দাড়ি কামাবার শব্দে আমার গভীর ঘুম ভেঙ্গে গেল। দেখলাম, অতিকায় রেজারে সে তুলে ফেলছে মৌখিক অভিব্যক্তি গুলি, ত্বকের বহুমাত্রিক আবরণ। তার শেষ অশ্রুপতনের শব্দে কেঁপে ওঠে রিখটার স্কেল, নদী পাড়ের মা। দেখি ঘরময় ছোটাছুটি করে ভয়ার্ত আয়না লুকাবার জায়গা খুঁজছে।
.........................................................
সম্পর্কটা পুরনো। তো, সেই সম্পর্কের
মধ্যেখানে যারা আসে তারা কেউ আস্ত
থাকে না। হেঁসেল হাসে। তবুও গ্রহের
ফেরে কেউ না কেউ... সর্ষে থেকে সূর্যাস্ত
পৃথিবীর ভাড়াটিয়া। শ্রীযুক্ত সুরেশ
মহিম-অচলার মাঝখানে, ঠিক তখনই—
গৃহদাহ! শরৎ বাবু প্রকৃত মরমী.........
হেঁসেলেরা কাড়ে – কাশে অন্তর প্রদেশ।
ফিসফিসিয়ে আঁধার হল – খাড়া তার টিকি
টানাপোড়েনের প্রেমে কথা কাটে লোকে।
শো ভাঙে সতত পথে, নামে চোখে জল।
সম্পর্কটা পুরনো তো, সেটাই আসল—
স্বদেশ গীতিকা লেখা উনুনের চোখে
শিল-নোড়া আদতে সহজ – কৃষ্ণ-প্রতিকী
....................................

উত্তাপ দিও না আর
আয়ুর কপালে হাত রেখে
ছবিতেই বেঁচে থাকা ভালো
ভোগহীন বয়সে যুবক
চকচকে জীবন্ত ল্যামিনেটেড
পেছনে আংটা আছে দুটো
টেবিলে রেখো, যদি মনে কর
দেওয়ালেও টাঙাতে পারো
যেমন ভালোবাসো।

Saturday, June 12, 2010

উন্মাদ রাত্রির দিনলিপি ১

সবাই একা, প্রত্যেকেই
একা একা
নিজের ভিতরে,
স্বজন বান্ধব অথবা প্রেয়সী-প্রিয়্তম
দূরত্বের আকাশ, আপাত
সংঙ্গে থাকে.........
আসলে একা ......... একাই,
নিজেরই ছায়ার সংঙ্গে নির্জনে
নিজেকে দেখা
কথা বলে যাওয়া
সকাল – দুপুর – সন্ধ্যায়।।

.............................

তোমার সুরক্ষা চাই আর কিছু নয়
আমার শরীর জুড়ে আদিগন্ত পাপ
প্রতিদিন মরি তাই দিনে আর রাতে
আমার ভুলের থেকে আরো দূরে যাও
আমার কাছেতে শুধু নামটুকু থাক
প্রিয় নাম গায়ে মেখে পাপক্ষয় করি
তোমার সুরক্ষাটুকু নিশ্চিত হলে
বিষন্ন শরীর জুড়ে বৃষ্টি নেমে আসে।।

...........................

কোথায় হারিয়ে ফেলেছি তাকে
এখন শুধু বন্দী জীবন......
পাথরেরা জেগে উঠেছে
দেওয়ালও পেতে আছে কান
দেওয়ালে দেওয়ালে আমি ওকে লিখলাম।

জানলায় উড়ে আসে সময় কংঙ্কাল
যার কাছে ফেলে আসি যৌবনের ঘ্রাণ
সমস্ত কপাট খুলে আমি উন্মাদ
ভেতরে ঢুকেছি তার, ভেতরে বাগান...
আজ লিখি নিজের কাছে নিজের নির্বাসন।।

...........................

কি ভয়ানক শূন্যতা
শূন্যতা এখন তোমার বুকেও বাজে
অ্যান্টিসেপ্টিক ক্রিম লাগাও ক্ষতে
তুমি এখন অ্যানাকোন্ডা হও প্রতি রাতে।।

Wednesday, May 5, 2010

পৃথিবীর সব প্রাপ্তবয়স্ক মেয়েদের প্রতি

কপালে দিয়েছি চুমু
ছুঁয়েছি গোলাপ দুই ঠোঁট
তারপর গেঁথে গেছে, পাঁচটি আঙ্গুল
হাতের আঙ্গুল

দেহ জানে দেহ তার নিজস্ব ভাষায়

হাতের আঙ্গুলে মুদ্রিত রাতের অক্ষর
নির্জন রাত্রি পাঠ হাতের আঙ্গুলে
নির্জন রাতের ভাষা, কাব্য হয় গোলাপ দু ঠোঁট

জগতে সকল নারী সুখী হোক

জগতে পুরুষ সব হয়ে যাক
রাত্রির নির্জন মাঠে দক্ষ এক চাষা

Thursday, March 11, 2010

প্রজাপতি মেয়ে

প্রজাপতি মেয়ে

হালকা গোলাপী সাজ
চোখের তারায় খেলে হরিণি, চঞ্চল

''এখানে হাতটি রাখো, ঠিক এইখানে''

মেয়েটি বুকের ভাজে কী যেন দেখায়।

আমি তার বুকে খুজি ভাদরের নদী


নি:শ্বাস ভারী হয়

তপ্ত হাওয়ার সুর মাতাল মাতল

মেয়েটির চোখ ভাসে জলে


বাসা বেধে বসে আছে বুকে তার

ব্যথা ও অসুখ।

Monday, January 11, 2010

একটি নারী সম্বন্ধীয় কবিতা

বয়সে বালক ছিলাম, রমণীর লাস্যময়ী হাসি
প্রথমে লাজের ঘোর, তারপর ঘোরলাগা রাত
ফিস ফিস বাতাসেও, উড়ু মন উদাস উদাস

বালক যুবক হলে

বাতাসেও বুঝে যায় বুঝি?

বালিকার বুক থেকে খসে পড়ে দেয়াল কপাট


বয়সে বালক ছিলাম নেই তার কোনোই গড়িমা

যুবতীর বুকে খুজি-
আমাকে নির্মাণ কেন, কিসের মহিমা?

Sunday, January 10, 2010

প্রণয়

চাদের আলোয় বারান্দাতে একটি বাগান তৈরী হলো
আকাশ থেকে পড়ল খসে স্বপ্ন এবং রাত্রি নেশা

হাতে হাতে চোখে চোখে

তুমি আমি আমরা হলাম

আমরা দুজন আমরা হলাম

নতুন বাগান তৈরী হবে...

Monday, January 4, 2010

খড়াকাল

ভালোবাসা লেখা হয় কবিতায় কবিতায়
পাখির ঠোঁটের সুর তুলে আনা
ফিদার ছবিতে
মাধুরীরর কোমর ও নাভিতে
ভালোবাসা খুঁজে পাওয়া
চৌরাশিয়ার বাঁশি, আহা ভালোবাসি

ভালোবাসা ছড়ানো ছিটানো কত না

চিঠিতে, গল্পে পাতায় পাতায়
লেখা হয়
রমনায়
চন্দ্রিমা উদ্যানে
গাছের বাকল তুলে
নখের আঁচরে

ভালোবাসা চারিদিকে ছড়ানো ছিটানো

আকাশে বাতাসে দেহে চোখের পাতায়

একবার যদি কেউ কুড়িয়ে কুড়িয়ে

এ অমল ভালোবাসা হৃদয়ে করত জমা
আহা! কত সুখ হতো।